ফেলটুস ব্যাটসম্যানদের ম্যাচ!
টেস্ট বাদে আর দুটি সংস্করণের ক্রিকেট এখন রানের খেলা। কে কত রান করতে পারে! আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে যেকোনো দেশের ঘরোয়া আসরেও ব্যাপারটা এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য। গাজী গ্রুপ ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব কিন্তু আজ এ সত্যের ধারেকাছেও ছিল না!ওয়ানডেতে কি আন্তর্জাতিক কি ঘরোয়া অঙ্গন, সবখানেই তিন শ রানের দলীয় স্কোর বেশ খেলো হয়ে এসেছে। একটু ভালো ব্যাটিং করলেই তিন শ রান মাটিতে নামানো সম্ভব অনায়াসে। সেখানে ১৩৭ রান তাড়া করতে নেমে কী ঘটতে পারে? বলবেন, এ তো টি-টোয়েন্টির স্কোর, যেটা কিনা অনেক দলই ১৫-১৬ ওভারের মধ্যে হরহামেশাই জিতছে! দুঃখিত, শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কিন্তু তা ঘটেনি। যা ঘটেছে তা স্রেফ অবিশ্বাস্য!
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের এই ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৭ রান তুলতে পেরেছে। মোহামেডানের কাজী অনীক (৪/২৮) ও মোহাম্মদ আজিম (৩/৩২) মিলে ধসিয়ে দেন গাজীর ব্যাটিং অর্ডার। কারও কোনো ফিফটি নেই, সর্বোচ্চ ৩৫ রান আটে নামা আসিফ হোসেনের। গাজীর যে পাঁচজন দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি, তার মধ্যে চারজন টপ অর্ডারসহ মোট দুটি ‘ডাক’।
তো, এই মামুলি স্কোর তাড়া করতে নেমে মোহামেডান একটি জায়গায় গাজীকে টপকে গেছে—তাদের ব্যাটিং অর্ডারে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে ব্যর্থ মোট আটজন! ব্যাটিং যদি হয় এমন ফেলটুস-মার্কা, তাহলে জয়ের আশা কি থাকে? ৩৩.২ ওভার খেলে মোহামেডান অল আউট হয়েছে মাত্র ১০৮ রানে!
সর্বোচ্চ ২২ রান এসেছে রকিবুল হাসানের ব্যাট থেকে। অধিনায়ক শামসুর রহমানের অবদান ১৯ আর ওপেনিংয়ে জনি তালুকদার ১৫। বাকিরা স্রেফ মুঠোফোনের সংখ্যা! রনি তালুকদার, আমিনুল ইসলাম, ইরফান শুক্কুর, বিপুল শর্মা, এনামুল হক, তাইজুল ইসলাম, অনীক ও আজিমদের স্কোর যথাক্রমে সাজালে চেহারাটা এমন দাঁড়ায়—৫, ০, ৮, ৪, ৬, ৬, ১, ০!
গাজীর ২৯ রানের এই অবিশ্বাস্য জয়ে মোহামেডান ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা যতটুকু, তাঁদের বোলারদের অবদান কিন্তু মোটেও কম নয়। ১০ ওভারে ২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের স্বল্প সংগ্রহকে জয়ের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ করেছেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। জাতীয় দলের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি ৭.২ ওভারে ৩৫ রান দিলেও তাঁর শিকার ৩ উইকেট। আরেক অফ স্পিনার মেহেদী হাসান সবচেয়ে ‘কিপটে’—৯ ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট। এ ছাড়া টিপু সুলতানের শিকার ২৭ রানে ২ উইকেট।
মোহামেডানের এই অবিশ্বাস্য হারে প্রশ্ন উঠতে পারে, প্রতিপক্ষের মামুলি স্কোর দেখে ব্যাটসম্যানরা কি গা-ছাড়া মনোভাবের শিকার? তাহলে গাজীর বোলাররা কিন্তু এই স্বল্প স্কোর নিয়েই দল জেতানোর নায়ক!
Comments
Post a Comment